Monday, January 2, 2017

অপ্রত্যাশিত ব্রেকআপ
//
\\
অনুর সাথে নীলয় আর রিলেশন রাখবে
না বলে ফোনে জানিয়ে দেয়।নীলয়
কেন এসব বলছে তার কিছুই জানেনা
অনু।কথাটা শুনে মনের সাথে অনেকটা
যুদ্ধ করে অবশেষে নীলয়কে ফোন দেয়
অনু।নীলয় জানত অনু ফোন দিবে এবং
এটাও জানে কেন ফোন দিয়েছে তাই
রিসিভ করল।রিসিভ করেই.......
\\
"কি হলো আবার ফোন দিলে কেন? একটু
আগেই না কথা বললাম।
"তোমার সাথে আমি দেখা করব একটু
সময় দিবে?
"জানি তুমি ভাবছ আমি তোমাকে সময়
দেব না।অন্যদের মতো কাজের
বাহানা দেখাব।কিন্তু এর একটাও আমি
করব না।আমার কথায় নানা সমস্যা
উপেক্ষা করে তুমি তোমার জীবনের
অনেকটা সময় আমাকে দিয়েছ।বলো কখন
দেখা করতে হবে??
"বিকালে নদীর পাড়ে চলে এসো।
"হুম,ঠিক আছে।
"আচ্ছা রাখি।
"আচ্ছা।

যথাসময়ে দুজনই নদীর পাড়ে চলে
এসেছে।অনু বসে আছে আর নীলয়
দাঁড়িয়ে।অনু কিছু বলছে না তাই নীলয়
নিজেই ওর পাশে বসল।অনু বুঝতে পারছে
না ঠিক কিভাবে কথা বলা শুরু করবে।
অনেকটা সময় নীরবতা আর নদীর পাড়ের
অপরূপ সৌন্দর্য দেখেই কাটিয়ে দেয়
দুজন।মনের সাথেও হয়ত যুদ্ধ করছে তারা।
নীরবতা ভেঙ্গে নীলয় অনুকে কেন
দেখা করতে বলছে জানতে চায়।
নীলয়ের কথা শুনে অনেকটা কান্না
ভেজা কন্ঠেই অনু বলে উঠে......
..
"কেন তুমি রিলেশন রাখতে চাচ্ছ না?
"আমার কিছু বলার নাই।শুধু এতটুকুই জানি
তোমার সাথে আমার রিলেশন রাখা
সম্ভব না।
"কেন কি দোষ আমার?
"আমি কি বলছি তোমার কোন দোষ
আছে?
"তা বলনাই।কিন্তু তুমিতো বলবা কেন
রিলেশন রাখতে চাও না।
"প্লিজ আর কোন প্রশ্ন করোনা।তুমি চলে
যাও।
"কেন প্রশ্ন করব না??
"তোমাকে বলছি তো তুমি চলে যাও।
কথা বাড়াচ্ছ কেন?
"আমি যাবনা।আগে আমার প্রশ্নের
উত্তর দাও তারপর আমি চলে যাব।
"আমি কিছুই বলব না।এখন বল তুমি যাবে
নাকি আমিই চলে যাব??
"ঠিক আছে চলে যাচ্ছি।আর কোনদিন
তোমার সামনে আসব না।
।।।।
এতটুকু বলেই কান্না করতে করতে চলে
যায় অনু।নীলয় অনুর চলে যাওয়া টাও
দেখেনি।
।।।।
অনুর সাথে ব্রেকআপ করে নীলয় ও সুখী
না।ফেইসবুকে পরিচয় তাদের।অনুর
ভালো ব্যবহার,অন্যান্য মেয়েদের
তুলনায় ধার্মিক এসব দেখেই ভালো
লেগে যায় নীলয়ের।কিছুদিন
চ্যাটিং করার পর বন্ধুত্বটা ঘনিষ্ঠ হয়
এবং নীলয় অনুর ছবি দেখতে চায়।নীলয়
অনেক ভাল ছেলে এটা অনু জানত তাই
নির্দ্বিধায় ও তার ছবি নীলয়কে
দিয়ে দেয়।ছবি দেখে নীলয় অনুর প্রতি
আরোও দুর্বল হয়ে যায় এবং দুজনের
মাঝে বন্ধুত্ব চেয়েও বেশী মধুর একটা
সম্পর্ক হয়েছিল।যার নাম ভালোবাসা।
ভালোই চলছিল এতদিন।এর মাঝে আরও
কয়েকবার দেখা হয়েছিল ওদের।
।।।।
আজ শেষ দেখা।এত ভালো সম্পর্কটা আজ
শেষ করে দিল নীলয়।অনু ভেবেছিল
দেখা করলে হয়ত সব ঠিক হয়ে যাবে।
কিন্তু কিছুই হলো না।তাদের সম্পর্ক শেষ
করার পেছনে নেই অনুর কোন দোষ। সম্পর্ক
শেষ করার পেছনে নীলয়ের দোষই বা
কতটুকু তা অনেকটা বিবেচনার বিষয়।
নীলয়ের পরিবারের সাথে অনুর
পরিবারের আর্থিক অবস্থার অনেক
ব্যবধান। নীলয় আগে জানলেও প্রেমের
কাছে তা গুরুত্ব পায় নি । কিন্তু
নীলয়ের বাবা-মা যখন খোঁজ নেন তখন
অনুর পরিবারের কথা জানতে পারেন ।
আকাশ দূর দিগন্তে মাটির সাথে
মিশে গেছে মনে হলেও যেমন মিশে
যায় না, তেমনি ধনীর দুলালের সাথে
সাথে হতদরিদ্র কন্যার প্রেমও
বেমানান। নিলয় যদিও অনেক চেষ্টা
করেছিল বাবা মা কে মানাতে,
কিন্তু নিয়তির নির্মম পরিহাসে
বাবার অসুস্থতা আর মায়ের অনশনের
কাছে হার মানতে হয় নিলয় কে। আর
তাইতো নিলয়ের মুখে কোন জবাব ছিল
না।সমাজের মানুষের কাছে ছোট হয়ে
যাবে তাই নিজের ছেলেকে বাধ্য
করেছে অনুর সাথে ব্রেকআপ করতে।
বেচারা নীলয় ও বাবা-মার
ভালোবাসা হারাতে চায়নি।তাই
অনুকে ফিরিয়ে দিয়েছে।অনুকে এসব
বলার
মতো সৎ সাহস নীলয়ের নাই।তাই সে
অনুর সাথে খারাপ ব্যবহার করে বিদায়
করে দিছে।

টাকার কাছে ভালোবাসার মতো
একটা পবিত্র সম্পর্ক ভেঙ্গে গেল।
ভালোবাসার পথে বাঁধা থাকবেই।
কেউ কেউ বাঁধা বিপত্তি জয় করে
ভালোবাসা পায় আবার কেউ কেউ
একটু বাঁধা পেলেই নিজেকে গুটিয়ে
নেয়।টাকার কাছে ভালোবাসাকে
যদি বলিদানই দিতে হয়,তবে কি দরকার
প্রেম করার??

No comments:

Post a Comment