ছোট্ট একটা পৃথিবী, ভালোবাসার চাষ ছাড়া বড্ড শ্বাসরুদকর
রোগী দেখছিলাম। এক দম্পতি এলেন সাথে তাদের ছ'বছর বয়সী ছানা। মহিলার কানে সমস্যা। পাশের টুলে বসিয়ে পরীক্ষা করছি। ডেস্কের উল্টোপাশে ভদ্রলোক তার ছেলেকে নিয়ে বসেছেন। পুচকা খানিক এদিক যেতে চায়, খানিক ওদিক যেতে চায়, খনেক এটা ধরতে চায়, তো আবার ঐটা করতে চায়।
ত্যক্ত হয়ে ভদ্রলোক বললেন,"এহ বাবা, দুষ্টু করে না, ডাক্তার আংকেল পিট্টি দেবে...পাছার মধ্যে ইঞ্জেকশান দিয়া দিবে...তখন বুঝবা..."
আমি চুপচাপ শুনে গেলাম। ভদ্রমহিলাকে দেখা শেষ করে ব্যবস্থাপত্র লিখে তা বুঝিয়ে দিয়ে তাদের দু'জনকে বললাম,"আপনাদের হাতে কিছু সময় হবে আমাকে দেবার?"
দু'জনেই বললেন, "অবশ্যই হবে....কি যে বলেন না ভাই..."
আমি বললাম,"আমার কাছে আগেও এসেছেন, আজও এলেন। এখন পর্যন্ত আমি না আপনাদের সাথে রূঢ় ব্যবহার করেছি, না আপনার বাচ্চার সাথে, না আপনাদের সামনে অন্য কারো সাথে....এমনকি আপনার সন্তান যখন আমার ডেস্কের যন্ত্রপাতির ট্রে ওলটপালট করলো আমি আমার মত গুছিয়ে নিলাম, আপনাদের কিছু বললামও না। অথচ আপনারা আপনাদের বাচ্চাকে ডাক্তার আংকেল পিটাবে, পাছায় ইঞ্জেকশান দেবে, বল্লু কাটি দিবে- আরো কতকি বলেন...কেন বলেন এসব?"
তারা নিশ্চুপ।
আমি বললাম," আমরা যখন আমাদের বাচ্চাদের অপরিচিত-অর্ধপরিচিত লোকজনের সাথে পরিচিত না করিয়ে এ ধরনের ভীতিসঞ্চার করি, তখন তাদের সুস্থ, সুন্দর, প্রাকৃতিক সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। তাদের কাছে অচেনা মানুষ মানেই খারাপ এমন ধারণা প্রতীয়মান হয়। এটা যে শুধু মানুষের ক্ষেত্রে হয় তা নয়। অনেককেই দেখবেন কুকুর, বেড়াল,পশুপাখি দেখলে ধাওয়া দেয়, ঢিল ছুঁড়ে, আঘাত করে, কষ্ট দিয়ে তাদের আর্তনাদ শুনে মজা নেয়। তার কারণ তারা ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছে মানুষ ঠগবাজী করে, কুকুর কামড় দেয়, বিড়াল আচড় দেয়, মুরগী ঠোকর দেয়, গরু লাত্থি দেয়। তাই তাদের কষ্ট দিতে দোষ নেয়। এজন্য সমাজে হাসতে হাসতে মানুষের পায়ুপথে গ্যাস ঢুকিয়ে মেরে ফেলা, কুকুরের গায়ে গরম ভাতের মাড় ঢেলে দেওয়ার মত মানুষ বাড়ছে। চেষ্টা করবেন নতুন সবকিছুর সাথে আপনার শিশুকে একটা সুন্দর তথ্যসহ পরিচয় করিয়ে দিতে। তাতে আপনার শিশুর মনে ঝকঝকে এক রঙিন শৈশবের স্মৃতি সারাজীবন গেঁথে যাবে, সব মানুষকে তার আপন মনে হবে যার ফলে সবার ভালো করতে, সবার ভালো চাইতে তার আটকাবে না। যদি আপনার সন্তানের সামনে কেউ আপনার সাথে দূর্ব্যবহার করে, তাহলে বলবেন, দেখ বাবা, আংকেল আসলে খুবই ভালো, কিন্তু আজকে আংকেলের মন খারাপ, আমরা আংকেলের কাছে আরেকদিন আসব, এখন আংকেলকে একটা হাসি দাও তো....দেখবেন আপনার সন্তানের মিষ্টি হাসিতে, ছোট হাতের স্পর্শে দূর্ব্যবহারকারীর মনটা কিছুটা হলেও ভালো হবে..."
খানিক দম নিয়ে আবার বললাম, "অনেক কথা বলে ফেললাম, কারণ এমন ফেরেশতার মত একটা বাচ্চা আমার সামনে থেকে সুযোগ পাইলেই আমি তারে পাছায় ইঞ্জেকশান দিব এই ধারণা নিয়ে যাবে এটা কেন জানি মেনে নিতে পারছিলাম না...."
রোগী দেখছিলাম। এক দম্পতি এলেন সাথে তাদের ছ'বছর বয়সী ছানা। মহিলার কানে সমস্যা। পাশের টুলে বসিয়ে পরীক্ষা করছি। ডেস্কের উল্টোপাশে ভদ্রলোক তার ছেলেকে নিয়ে বসেছেন। পুচকা খানিক এদিক যেতে চায়, খানিক ওদিক যেতে চায়, খনেক এটা ধরতে চায়, তো আবার ঐটা করতে চায়।
ত্যক্ত হয়ে ভদ্রলোক বললেন,"এহ বাবা, দুষ্টু করে না, ডাক্তার আংকেল পিট্টি দেবে...পাছার মধ্যে ইঞ্জেকশান দিয়া দিবে...তখন বুঝবা..."
আমি চুপচাপ শুনে গেলাম। ভদ্রমহিলাকে দেখা শেষ করে ব্যবস্থাপত্র লিখে তা বুঝিয়ে দিয়ে তাদের দু'জনকে বললাম,"আপনাদের হাতে কিছু সময় হবে আমাকে দেবার?"
দু'জনেই বললেন, "অবশ্যই হবে....কি যে বলেন না ভাই..."
আমি বললাম,"আমার কাছে আগেও এসেছেন, আজও এলেন। এখন পর্যন্ত আমি না আপনাদের সাথে রূঢ় ব্যবহার করেছি, না আপনার বাচ্চার সাথে, না আপনাদের সামনে অন্য কারো সাথে....এমনকি আপনার সন্তান যখন আমার ডেস্কের যন্ত্রপাতির ট্রে ওলটপালট করলো আমি আমার মত গুছিয়ে নিলাম, আপনাদের কিছু বললামও না। অথচ আপনারা আপনাদের বাচ্চাকে ডাক্তার আংকেল পিটাবে, পাছায় ইঞ্জেকশান দেবে, বল্লু কাটি দিবে- আরো কতকি বলেন...কেন বলেন এসব?"
তারা নিশ্চুপ।
আমি বললাম," আমরা যখন আমাদের বাচ্চাদের অপরিচিত-অর্ধপরিচিত লোকজনের সাথে পরিচিত না করিয়ে এ ধরনের ভীতিসঞ্চার করি, তখন তাদের সুস্থ, সুন্দর, প্রাকৃতিক সামাজিকীকরণ প্রক্রিয়া ব্যাহত হয়। তাদের কাছে অচেনা মানুষ মানেই খারাপ এমন ধারণা প্রতীয়মান হয়। এটা যে শুধু মানুষের ক্ষেত্রে হয় তা নয়। অনেককেই দেখবেন কুকুর, বেড়াল,পশুপাখি দেখলে ধাওয়া দেয়, ঢিল ছুঁড়ে, আঘাত করে, কষ্ট দিয়ে তাদের আর্তনাদ শুনে মজা নেয়। তার কারণ তারা ছোটবেলা থেকে শুনে এসেছে মানুষ ঠগবাজী করে, কুকুর কামড় দেয়, বিড়াল আচড় দেয়, মুরগী ঠোকর দেয়, গরু লাত্থি দেয়। তাই তাদের কষ্ট দিতে দোষ নেয়। এজন্য সমাজে হাসতে হাসতে মানুষের পায়ুপথে গ্যাস ঢুকিয়ে মেরে ফেলা, কুকুরের গায়ে গরম ভাতের মাড় ঢেলে দেওয়ার মত মানুষ বাড়ছে। চেষ্টা করবেন নতুন সবকিছুর সাথে আপনার শিশুকে একটা সুন্দর তথ্যসহ পরিচয় করিয়ে দিতে। তাতে আপনার শিশুর মনে ঝকঝকে এক রঙিন শৈশবের স্মৃতি সারাজীবন গেঁথে যাবে, সব মানুষকে তার আপন মনে হবে যার ফলে সবার ভালো করতে, সবার ভালো চাইতে তার আটকাবে না। যদি আপনার সন্তানের সামনে কেউ আপনার সাথে দূর্ব্যবহার করে, তাহলে বলবেন, দেখ বাবা, আংকেল আসলে খুবই ভালো, কিন্তু আজকে আংকেলের মন খারাপ, আমরা আংকেলের কাছে আরেকদিন আসব, এখন আংকেলকে একটা হাসি দাও তো....দেখবেন আপনার সন্তানের মিষ্টি হাসিতে, ছোট হাতের স্পর্শে দূর্ব্যবহারকারীর মনটা কিছুটা হলেও ভালো হবে..."
খানিক দম নিয়ে আবার বললাম, "অনেক কথা বলে ফেললাম, কারণ এমন ফেরেশতার মত একটা বাচ্চা আমার সামনে থেকে সুযোগ পাইলেই আমি তারে পাছায় ইঞ্জেকশান দিব এই ধারণা নিয়ে যাবে এটা কেন জানি মেনে নিতে পারছিলাম না...."
No comments:
Post a Comment